Thursday, May 2, 2013

Ray - The master Storyteller



বেঁচে থাকলে বয়স হতো ৯২ বছর। অনেকেই তো আছেন, অনেকেই সুঠাম…কর্মশীল। শুধু নেই বিশপ লেফ্রয় রোডের সেই বিখ্যাত ঘর আলো করে থাকা মানুষটা। যিনি আছেন ভেবেই কলকাতা খানিকটা নিশ্চিন্ত হত। যিনি আছেন টের পাওয়া যেত পুজোবার্ষিকীতে।

ফেলুদা চার্মিনারের ধোঁওয়া উড়িয়ে সর্বক্ষণের সঙ্গী তোপসে আর জটায়ুকে নিয়ে পাড়ি দিচ্ছেন নতুন কোনো জায়গায়, নতুন তদন্তের ভারে। প্রফেসার শঙ্কু মেতে উঠছেন তাঁর নতুন আবিষ্কারে, আর খবরের কাগজের শিরোনাম দখল করছে …নতুন ছবির কাজে হাত দিয়েছেন সত্যজিত।

আমাদের বাড়িতে সদ্য আসা শাদা-কালো টিভিতে খবর পড়ছেন ছন্দা সেন আর জনপ্রিয় ঘোষিকা শাশ্বতী দাশগুপ্ত জানাচ্ছেন আজকের ছায়াছবি ‘গুপীগায়েন বাঘা বায়েন’, দিনটা অনেক দিন আগের কোনো এক দোশরা মে…আমরা ডুবে যাচ্ছি গানে…
মহারাজা তোমারে সেলাম…সেলাম…সেলাম/ মোরা বাঙলা দেশের থেকে এলাম…
কিন্তু তারো আগে দেখে নিয়েছি পথের পাঁচালী।

কলকাতার লোকজন সেই প্রথম দেখেছিলো বড় বড় হোর্ডিং। কাশ ফুলের মধ্যে দিয়ে ছুটে চলেছে ভাই বোন। কোথাও বা নক্সা করা আলপনার পোষ্টার…“বিভূতিবাবুর সেই নভেলটা না” অনেকে ফিস ফিস করেছেন আর পথের পাঁচালী ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে একের পর এক পুরষ্কার। শুধু তাই নয় পরবর্তী কালের ভারতীয় চলচ্চিত্রের তাবড় পরিচালকেরা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সত্যজিতকে…তাঁদের লেখায়…ছবিতে…, ঠিক এমন ভাবে শুরুটা না করলে হয়তো সত্যি এমন একটা ভারতীয় চলচ্চিত্রের এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরী হতো না। স্ব-সম্ভ্রমে বলেন শ্যাম বেনেগাল। যিনি পথের পাঁচালীর প্রিন্ট ঘাড়ে করে ঘুরে বেড়াতেন। বন্ধুদের দেখাতেন। পরবর্তীকালে যিনি একটা বড় ডকুমেন্টারী করবেন সত্যজিতকে নিয়ে।

আজ মানুষটা নেই। কিন্তু রয়ে গেছে অফুরন্ত কাজের এক ভান্ডার। যাদের কাছে বার বার ফিরে ফিরে যেতে হয়। আর ঠিক তখনই বছরের প্রতিটা দিন হয়ে ওঠে দোশরা মে।

Article courtesy, Shaatkahan Web Magazine

No comments:

Post a Comment